Written by Dr.Md.Redwanul Huq (Masum) |
Saturday, 23 August 2014 18:25 |
ব্রণ কি?
ব্রণ হল আমাদের ত্বকের ফলিকলের এক ধরনের দীর্ঘমেয়াদী রোগ যা ১৩ থেকে ১৮ বছর বয়সে বেশি হয়। সাধারণত মুখমন্ডল, গলা, বুকে ও পিঠের উপরিভাগ আর হাতের উপরিভাগে এই রোগটা হয়। বয়ঃসন্ধিকালে হরমোন টেস্টোস্টেরন আর প্রোজেস্টেরনের প্রভাবে ত্বকের সিবেসিয়াস গ্রন্থি বেশি করে তেল নিঃসরণ শুরু করে যা তেল গ্রন্থির ভিতর জমতে শুরু করে। জমতে জমতে এক সময় গ্রন্থিটা ফেটে যায়। ফলে তেল আশপাশের টিস্যুতে ছড়িয়ে পড়ে। তখন ব্যাকটেরিয়া তেলকে ভেঙে টিস্যুতে ফ্যাটি এসিড তৈরী করে। এই ফ্যাটি এসিড ত্বকের ভেতর প্রদাহ সৃষ্টি করে । এর ফলে চামড়ার মধ্যে দানার সৃষ্টি হয় যাকে আমরা ব্রণ বলি ।
ব্রণের কারণ সমূহ-
- বয়ঃসন্ধিকালে অতিরিক্ত এন্ড্রোজেন নিঃসরণ
- ময়েশ্চারাইজিং লোশন বা কড়া মেকআপ ব্যবহার করা
- অতিরিক্ত আবেগ বা উদ্বিগ্নতা
- মাসিক বা গর্ভাবস্থায় হরমোনের মাত্রার মধ্যে পরিবর্তন আসা
- জন্মনিয়ন্ত্রণের পিল, খিঁচুনি বা মানসিক রোগের ওষুধ, স্টেরয়েড ট্যবলেট ইত্যাদি সেবন করা।
ব্রণ প্রতিরোধে করণীয়ঃ
- তৈলাক্ত খাবার, চকলেট,ঝাল, ভাজাপোড়া খাবার, আইসক্রিম ও অন্যান্য ফাস্টফুড খাওয়া কমিয়ে দেন।
- ত্বক পরিচ্ছন্ন রাখেন।
- মুখের তৈলাক্ততা কমানোর জন্য “একনি সোপ বার”/ ‘নিউট্রজিনা’ সাবান দিয়ে দিনে কয়েকবার মুখ ধুবেন। অন্য সাবান ব্যবহার করা ঠিক হবে না।
- ক্রিম যদি তৈলাক্ত হয় তবে তাও বাদ দেন।
- মুখে বা অন্য কোথাও ঘাম হলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন।
- রাতে ঠিকমতো ঘুমান।
- মানসিক চাপ থেকে মুক্ত থাকুন।
- বেশি করে পানি, ফল ও শাক-সব্জি খেলে ভাল হবে।
- কষ্ট হলেও সব ধরনের প্রসাধনী বর্জন করুন।
- কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে তার জন্য চিকিৎসা নিন।
- পুষ্টিহীনতা থাকলে প্রোটিন ও ভিটামিনসমৃদ্ধ খাবার খাবেন।
- মাথা খুশকিমুক্ত রাখার চেষ্টা করুন।
- ব্রণ একবার হয়ে গেলে চাপাচাপি, চুলকানো বা খোটাখুটি না করাই ভাল।
- আর ব্রণ পেকে গেলে বা বেশী হয়ে গেলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন। সমস্যা কি? এখন তো ডাক্তার অনলাইনেও পাওয়া যায়।
ব্রণের চিকিৎসা পদ্ধতিঃ
ব্রণের জন্য সময়ই সবচেয়ে বড় চিকিৎসক। রাতে ঘুমানোর সময় ভালো করে মুখ ধুয়ে শুধু ব্রণগুলোর ওপর এরিথ্রোমাইসিন লোশন লাগানো যেতে পারে।দিনে দুই একবার আইসোট্রেটিনইন জেল ব্যবহার করা যায়।বিভিন্ন অ্যান্টিবায়োটিক, যেমন- এজিথ্রোমাইসিন, এরিথ্রোমাইসিন, ক্লিনডামাইসিন, টেট্রাসাইক্লিন, মিনোসাইক্লিন, ডক্সিসাইক্লিন ইত্যাদিও ব্রণের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। ব্রণের কালো দাগ, পাকা ব্রণ ও সিষ্ট জাতীয় ব্রণের ক্ষেত্রে অপারেশন লাগতে পারে। বর্তমানে লেজার থেরাপি সবচেয়ে আধুনিক ও ফলপ্রসূ চিকিৎসা যা বাংলাদেশেও নেয়া যায়।
ভাল হয়ে যাক আপনার ব্রণ- এই কামনায়।
ফেইসবুকে আমাকে আপনার রোগ সম্পর্কে জানাতে লিখুন এখানেঃ
www.facebook.com/Medicalforallnet